Himu 4

পর্ব-৭

১. পৃথিবীর সব শিশু বয়স্ক ভীতু মানুষ দেখতে পছন্দ করে।

২. অবিশ্বাসের কাজগুলো খুব বিশ্বাসীরাই করে।

৩. পৃথিবীর সব শিশু বয়স্ক ভীতু মানুষ দেখতে পছন্দ করে।

৪. কেউ যখন ভয়ংকর অসুখ হয় তখন তার চারপাশের জগৎও শূন্য হয়ে পড়ে। তার মস্তিস্ক তখন তার জন্যে একজন সঙ্গী তৈরী করে।

৫. পশুদের জ্ঞান আছে, বুদ্ধি আছে, চিন্তাশক্তি আছে। এসব জেনেও আমরা অস্বীকার করি শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থে। অস্বীকার না করলে আমরা এদের কে হত্যা করে খেতে পারতাম না। আমাদের লজ্জা করত।

৬. সমাজের সর্ব নিম্নস্তরে যাদের বাস তাদের আবেগ-টাবেগ বোধহয় কম থাকে।

৭. সব মেয়ের ভেতর যেমন একজন পুরুষ বাস করে। সব ছেলের মধ্যেও একটি নারী বাস করে। নারী-পুরুষের বিভাজন রেখা দুর্বল।

৮. বিশেষজ্ঞদের কিছু জিজ্ঞেস করলেই তাঁরা এমন ভঙ্গিতে তাকান যেন প্রশ্নকর্তার অজ্ঞতায় খুব বিরক্ত হচ্ছেন। প্রশ্ন পুরোপুরি না শুনেই জবাব দিতে শুরু করেন।

৯. একমাত্র মানুষই খিদে না থাকলেও লোভে পড়ে খায় ।

১০. আল্লাহতালা মেয়েগুলিকে এত সুন্দর করে পাঠিয়েছেন কেন কে জানে? মেয়েদের সবই সুন্দর। এরা রাগ করলেও ভালো লাগে, অপমান করলেও ভালো লাগে। ভালোবাসার কথা বললে কেমন লাগবে কে জানে?

১১. ভিক্ষুক শ্রেণীতে লুলা স্বামীর অনেক কদর। আর্মি অফিসার এবং ইঞ্জিনিয়াররা রুপবতী স্ত্রী পায়। লুলা ভিক্ষুকরাও রুপবতী ভিক্ষুক স্ত্রী পায়!

১২. সব পুরুষের ভেতরই শয়তান থাকে। ছোট শয়তান, মাঝারি শয়তান,বড় শয়তান। চেহারা দেখে কিছু বোঝার উপায় নেই। যে যত বড় শয়তান তার চেহারা ততটাই ভাজা মাছ উল্টে খেতে পারি না টাইপ।

১৩. কোন মেয়েকেই আসলে পাওয়া যায় না। তারা অভিনয় করে সঙ্গে আছে এ পর্যন্তই। অভিনয় শুধু যে অতি প্রিয়জনদের সঙ্গে করে তা না, নিজের সঙ্গেও করে। নিজেরা সেটা বুঝতে পারে না।

১৪. একজন মানুষ তার এক জীবনে অসংখ্যবার তীব্র ভয়ের মুখোমুখি হয়। তুমিও হইবে। ইহাই স্বাভাবিক। ভয়কে পাশ কাটাইয়া যাইবার প্রবণতাও স্বাভাবিক প্রবণতা। তুমি অবশ্যই তা করিবে না। ভায় পাশ কাটাইবার বিষয় নহে। ভয় অনুসন্ধানের বিষয়। ঠিকমতো এই অনুসন্ধান করিতে পারিলে জগতের অনেক অজানা রহস্য সম্পর্কে অবগত হইবে। তোমার জন্য ইহার প্রয়োজনীয়তা আছে। তবে তোমাকে বলিয়া রাখি, এই জগতের রহস্য পেয়াজের খোসার মতো। একটি খোসা ছাড়াইয়া দেখিবে আরেকটি খোসা। এমনভাবে চলিতে থাকিবে- সবশেষে দেখিবে কিছুই নাই। আমরা শূন্য হইতে আসিয়াছি, আবার শূন্যে ফিরিয়া যাইব। দুই শূন্যের মধ্যবর্তী স্থানে আমরা বাস করি। ভয় বাস করে দুই শূন্যে। এর বেশি এই মুহূর্তে তোমাকে বলিতে ইচ্ছা করি না।

১৫. মানুষ দু’টা সময়ে খেলতে পছন্দ করে। শৈশবে এবং বৃদ্ধ বয়সে। শৈশবে খেলার সঙ্গী জুটে যায়, বৃদ্ধ বয়সে কাউকে পাওয়া যায় না। তখন খেলতে হয় নিজের সঙ্গে।

১৬. অধিকাংশ মানুষই আজকাল গুছিয়ে কথা বলতে পারে না। চিন্তা এলোমেলো থাকে বলে কথাবার্তাও থাকে এলোমেলো।

১৭. একটা চড়ুই পাখির মস্তিস্কের পরিমান কত? খুব বেশী হলে পঞ্চাশ মিলিগ্রাম। মাত্র পঞ্চাশ মিলিগ্রাম মস্তিস্ক নিয়েও সে বিপদ আঁচ করতে পারে। মানুষ কিন্ত পারে না। সিক্সথ সেন্স মানুষের ক্ষেত্রে তেমন প্রবল নয়।

১৮. শুরু হল একটি অন্ধকার দীর্ঘ রাত। মানুষের সঙ্গে পশুদের একটা বড় পার্থক্য আছে। পশুরা কখনো মানুষদের মত হৃদয়হীন হতে পারে না। পঁচিশে মার্চের রাতে হৃদয়হীন একদল পাকিস্তানী মিলিটারি এ শহর দখল করে নিল। তারা গুড়িয়ে দিল রাজারবাগ পুলিশ লাইন। জগন্নাথ হল ও ইকবাল হলের প্রতিটি ছাত্রকে গুলি করে মারল। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঢুকে হত্যা করল শিক্ষকদের। বস্তিতে শুয়ে থাকা অসহায় মানুষদের গুলি করে মেরে ফেলল বিনা দ্বিধায়। বাঙালীদের বেঁচে থাকা না থাকা কোন ব্যাপার নয়। এরা কুকুরের মত প্রাণী, এদের মৃত্যুতে কিছুই যায় আসে না। এদের সংখ্যা যত কমিয়ে আনা যায় ততই মঙ্গল। এদের মেরে ফেল। এদের শেষ করে দাও। এক রাতে এ শহর মৃতের শহর হয়ে গেল। অসংখ্য বাবা তাঁদের ছেলেমেয়েদের কাছে ফিরে গেল না। অসংখ্য শিশু জানল না বড় হয়ে ওঠা কাকে বলে। বেঁচে থাকার মানে কি? [পঁচিশে মার্চ রাতের বর্ণনা]

১৯. বাইরে তখন বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বাসার সামনে বিশাল পুকুর। পুকুর থেকে ঝুপ ঝুপ বৃষ্টির শব্দ আসছে। পিরোজপুর শহরে বৃষ্টি হওয়া মানেই কারেন্ট চলে যাওয়া। আমি সিরিয়াসলি পড়ছি ভেবেই আমার সামনে হারিকেন দেয়া হয়েছে। আমার মাথার ভেতর একের পড় এক লাইন আসছে। এক ধরনের অদ্ভুত ঘোরের মধ্যে আমি লিখতে শুরু করেছি আমার প্রথম উপন্যাস – শঙ্খনীল কারাগার।

২০. বাঙালি মেয়েরা দামি জিনিস তা সে যতই ক্ষতিকর হোক, ফেলে না। ডেট এক্সপায়ার হওয়া ওষুধও জমা করে রাখে।

২১. মহাপুরুষদের সবকিছু জয় করতে হয়। ক্ষুধা, তৃষ্ণা, ঘুম। ঘুম হচ্ছে দ্বিতীয় মৃত্যু। সাধারণ মানুষ ঘুমায়—অসাধারণরা জেগে থাকে।

২২. কৌতুহল আমাদের সবারই আছে, কিন্ত কৌতুহল মেটানোর জন্যে প্রয়োজনীয় পরিশ্রমটি আমরা করি না। করতে চাই না।

২৩. মেয়েরা অতি দূরের আত্মীয়কে কাছের প্রমাণ করার জন্য চট করে তুই বলে।

২৪. পুরুষদের আহত করার কৌশল মেয়েরা খুব তাড়াতাড়ি শিখে ফেলে এবং তা ব্যবহারও করে চমৎকার ভাবে। কেউ তার প্রতিভার বাইরে যেতে পারে না।

২৫. মেয়েদের স্বভাবই হচ্ছে গোপন করা। বয়ঃসন্ধিকালে তারা শরীর গোপন করতে শেখে। গোপন করার এই অভ্যাস তাদের মাথায় ঢুকে যায়। তখন তারা সবই গোপন করে।

২৬. চোখে যা দেখা যায় তা দ্রুত রহস্য হারায়। চোখে যা দেখা যায় না, যেমন ‘মন’, অনেকদিন রহস্য ধরে রাখে।

২৭. যে কথা বেশি বলে তার গুরুত্ব থাকেনা। কথা হলো দুধের মতো। অধিক কথায় দুধ পাতলা হয়ে যায়।

২৮. জগতের যত বড় বড় Crime তার সবের পেছনে একটা মেয়ে মানুষ থাকবে। শুরুতে সেটা মাথায় রাখলে সুবিধা হয়। ট্রয় নগরী ধ্বংস হয়ে গেল হেলেন নামের নাকবোঁচা এক মেয়ের জন্য।

২৯. খাদ্য দ্রব্য হাত দিয়ে স্পর্শ করাতেও আনন্দ আছে। সাহেবরা কাটাচামচ দিয়ে খায়। খাদ্য হাত দিয়ে ছোঁয়ার আনন্দ থেকে তারা বঞ্চিত।

৩০. মানুষ পরিবেশ দিয়ে পরিচালিত হয় না, মানুষের চালিকাশক্তি তার ডিএনএ। যা সে জন্মসূত্রে নিয়ে এসেছে। তার চারপাশের জগৎ তাকে সামান্যই প্রভাবিত করে।

৩১. শিশুরা লজিক বুঝতে পারে। সমস্যা বড়দের নিয়ে। বড়রা লজিক বুঝতে চায় না।

৩২. শিশুরা অতি সহজে অন্যের অপরাধ ক্ষমা করতে পারে।

৩৩. বয়স হলেই ছেলেরা মেয়েদের দিকে তাকায়। সেই তাকানোয় লজ্জা থাকে, দৃষ্টিতে সংকোচ থাকে।

৩৪. অন্ধকারে একটি সুন্দরী মেয়েও যেমন অসুন্দরী মেয়েও তেমন। পার্থক্যটা হচ্ছে আলোতে।

৩৫. কোনো মৃত মানুষ মহান আন্দোলন চালিয়ে নিতে পারেন না। একজন পেরেছিলেন। আমানুল্লাহ মোহম্মদ আসাদুজ্জামান। তাঁর রক্তমাখা শার্ট ছিল ঊনসত্তরের গনআন্দোলনের চালিকাশক্তি।

৩৬. খুনের মামলায় যে পড়ে সে এবং তার আত্মীয় স্বজনরা কখনো জুম্মার নামাজ মিস দেয় না।

৩৭. ভয় এবং কৌতূহল বোধ হয় পাশাপাশি চলে। প্রচন্ড ভীত মানুষের কৌতূহলও হয় প্রচন্ড। এরা জানালার শিক ধরে দাঁড়িয়েছে। দেখতে চেষ্টা করছে কী হচ্ছে বাইরে। কেউ কেউ চলে এসেছে বারান্দায়। চোখের সামনে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ দেখার আলাদা মাদকতা আছে। কিছুক্ষণের মধ্যে একধরনের ঘোর তৈরি হয়। মাথার ভেতরে জগাখিচুড়ির মত কিছু হয়। তখন মানুষ যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না এমন কান্ড করে” (২৫ শে মার্চ ১৯৭১ রাত)।

৩৮. একটাই উপদেশ,কার্বুরেটর ঠিক রাখবি। গাড়ির যেমন কার্বুরেটর ঠিক থাকলে সব ঠিক,মানুষেরও একই ঘটনা।

৩৯. আমাদের সমস্যা হচ্ছে আমাদের যখন গুছিয়ে কথা বলা দরকার তখন টেলিগ্রাফের ভাষায় কথা বলি। আর যখন সার সংক্ষেপ বলা দরকার তখন পাঁচ শ পৃষ্ঠার উপন্যাস শুরু করি।

৪০. একজন মানুষকে সত্যিকারভাবে জানার উপায় হচ্ছে তার স্বপ্নটা জানা।

পর্ব-৮

১. মেয়েদের টাইটে রাখতে হবে। তুলসি দাস বলেছেন – ‘ঢোল এবং স্ত্রী দুইটাকেই মারের উপর রাখতে হবে।

২. প্রথম শ্রেণীর চামচা হচ্ছে যারা স্বার্থ সিদ্ধির জন্যে চামচার ভাব ধরে থাকে। আর তৃতীয় শ্রেণীর চামচা হচ্ছে তারাই যাদের জন্মই হয়েছে চামচা হিসোবে।

৩. সৃষ্টিশীল মানুষ তার অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি কখনো খুব ভেবেচিন্তে করেন না। সেই সব কাজ হঠাৎ করে তৈরী হয়।

৪. আজকালকার ছেলেরা চা ছাড়া আর কিছু খেতে চায় না – অথচ গরমের মধ্যে তেতুলের সরবতের মত ভাল জিনিস আর কিচ্ছু নেই।

৫. রিকশায় চড়ায় একটা রাজকীয় ব্যাপার আছে। মাথা সামান্য উচু করলেই আকাশ দেখতে দেখতে যাওয়া যায়।

৬. মানুষ তার আবেগ, ভালোবাসা, ঘৃনার জন্ম ও অবস্থানের জন্যে যে স্থান নির্ধারিত করেছে সেটা হল হৃদপিন্ড- হার্ট।

৭. নতুন বিবাহিত স্বামীদের বেশ কিছুদিন স্ত্রী মনোরঞ্জনের জন্যে ফুচকা চটপটি এইসব খেতে হয়।

৮. মেয়েরা জানে না যে হাসি মুখে পুরুষদের কাছে তারা যদি কিছু চায় – পুরুষদের তা দিতেই হবে।

৯. পমানুষের পুরো জীবনটাই একগাদা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অপূর্ণ তৃষ্ণার সমষ্টি।

১০. মোমবাতির আলোর বই পড়ার আলাদা একটা আনন্দ আছে। আধো আলো আধো ছায়া। বইয়ের জগৎটিও তো তাই- অন্ধকার এবং আলোর মিশ্রণ। লেখকের কল্পনা হচ্ছে আলো, পাঠকের বিভ্রান্তি হচ্ছে অন্ধকার।

১১. ঘুষের ব্যাপারে দরদাম করার দস্তর আছে। দরদাম করে ঘুষ দিলে যিনি ঘুষ নেন তিনি ভাল বোধ করেন। ঘুষ নেয়ার লজ্জাটা কমে যায়।

১২. পাঁচের সঙ্গে দুই যোগ করলে কখন ছয় হয় ? কখন হয় ?’ যখন ভুল হয় তখন হয় ।অংকটা আসলে সহজ।

১৩. মানুষের সবচেয়ে কঠিন অভাব কোনটি? খাদ্যের অভাব। হয় নাই। বস্ত্রের অভাব। ক্ষুধার্ত অবস্থায় তুমি পথে বের হতে পারবে। ভিক্ষা চাইতে পারবে। নগ্ন অবস্থায় সেটা পারবে না।

১৪. যা আমরা বিশ্বাস করি না অথচ বিশ্বাস করতে চাই, তাই আমরা বারবার বলি।

১৫. মহান বীর যোদ্ধাও নিজের স্ত্রীর কাছে অসহায়।

১৬. পেটের ব্যথা ভুলে থাকবার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে থ্রিলার জাতীয় কোন রচনায় মনোনিবেশ করা।

১৭. আমাদের দেশের মানুষদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, যে কাজগুলো তারা করতে পারবে না, সেই কাজগুলোর দায়িত্ব তারা সবচেয়ে আগ্রহ করে নেবে।

১৮. তুমি যখন কারো কাছ থেকে বিদায় নিয়ে যাত্রা শুরু করবে তখন পেছনে ফিরে তাকাবে না। পেছনে ফিরে তাকানোর অর্থ হলো মায়া নামক ভ্রান্তিকে প্রশ্রয় দেয়া।

১৯. হাতের রেখায় মানুষের ভাগ্য থাকে না। মানুষের ভাগ্য থেকে কর্মে।

২০. স্ত্রীরা স্বামীর যে-কোনো বিষয়ের প্রতি অতিরিক্ত আগ্রহকে সন্দেহের চোখে দেখে।

২১. বুদ্ধিমান কেউ ভালো মানুষ হতে পারে না। ভালো মানুষেরা বোকাসোকা ধরনের হয়।

২২. মন্ত্রীদের আত্মীয় স্বজনেরা কথায় কথায় চাকরি খেতে চায়। চাকরি ছাড়া ওদের মুখে অন্য কিছু রোচে না।

২৩. যুক্তিবিদ্যা অতি দুর্বল বিদ্যা। সব দিকে এই বিদ্যা খাটানো যায়।

২৪. সমস্ত জীব-জন্তু ও পশু-পাখির জীবনের বেশীর ভাগ সময় কেটে যায় নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান করতে গিয়ে। মানুষের জন্যও এটা সত্যি। আমরাও নিরাপদ আশ্রয় খুঁজি।

২৫. আমরা মুখে অনেক কথা বলি না, কিন্ত আমাদের শরীর বলে। মনের ভেতরের কথা শরীর প্রকাশ করে দেয়। আমাদের মন অনেক কিছু বলতে চায় না। কিন্ত শরীর বলে দেয়।

২৬. মহান সৌন্দর্যের মুখোমুখি হলে এক ধরণের তীব্র হাহাকার মনের ভেতরে আপনা-আপনি জন্মায়, সুন্দরের উৎস সন্ধানে ব্যাকুলতা জাগে।

২৭. একজন সাধুর সঙ্গে তুমি যদি কিছুদিন থাক তোমার মধ্যে সাধু স্বভাব চলে আসবে। দুষ্ট লোকের সঙ্গে কিছুদিন থাক তোমার মধ্যে ঢুকবে দুষ্ট স্বভাব।

২৮. মানুষের কল্পনারও সীমা থাকে। আমার তো মনে হয় না কেউ কখনো কল্পনা করে সে উড়তে পারে। আকাশে উড়ে উড়ে বেড়াচ্ছে। কল্পনাকেও যুক্তির ভিতর থাকতে হয়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কল্পনাশক্তিও কমতে থাকে। একটা সময় আসে যখন মানুষ কল্পনা করেনা।

২৯. শৈশবে এক জ্যোতিষী আমার হাত দেখে বলেছিলেন, আমি ঠান্ডা মাথায় খুন করতে পারবো। তার গণনা কিন্তু এক অর্থে মিলে গেছে। এইসব দিনরাত্রি নামক ধারাবাহিক নাটকে আমি টুনিকে ঠান্ডা মাথায় খুন করেছি। শুধু টুনি না, আমার উপন্যাসের অনেক চরিত্রকেও অকালে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। আমি কি করব? আমার হাতে লেখা।

৩০. মনের তীব্র ব্যাথা কমানোর একটি উপায় হচ্ছে কিছু লেখা। যে লেখা ব্যক্তিগত দুঃখকে ছড়িয়ে দেয় সবদিকে।

৩১. বাংলাদেশ আর কিছু পারুক না পারুক, একদল পাগল ছেলে তৈরি করে পৃথিবীময় ছড়িয়ে দিয়েছে! যারা বাংলাদেশ ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারে না।

৩২. যা পাওয়া যায়না তার প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যায়।

৩৩. ছায়া ঢাকা ঘুঘু ডাকা’ গ্রাম তেমন পছন্দ হচ্ছে না। শহরবাসী হওয়ার এই এক সমস্যা। ভোরবেলা চায়ের কাপের সাথে পত্রিকা লাগে। ভালো বাথরুম লাগে। রাতে বই পড়ার জন্য টেবিল ল্যাম্পের আলো লাগে।

৩৪. মেয়েরা সাধারণত টিপ দেওয়ার ব্যাপারে খুব সাবধানী হয়। টিপ এক পাশে হলে সংসারে সতীন জোটে- তাই বাড়তি সাবধানতা।

৩৫. একটা বয়স পর্যন্ত হয়তো মেয়েদের অকারণ অর্থহীন কথা শুনতে ভালো লাগে, তারপর আর লাগে না। এই মেয়েটি অকারণে কথা বলেই যাচ্ছে। মেয়েটার মনে গোপন কোনো টেনশন আছে কি? টেনশনের সময় ছেলেরা কম কথা বলে, মেয়েরা বলে বেশি।

৩৬. পুরনো জিনিস তো আবার ফিরে আসছে। পুরনো প্যাটার্নের গয়নাকে এখন খুব আধুনিক ভাবা হচ্ছে।

৩৭. গ্রামের মানুষদের মধ্যে সবচে বেশি কথা বলে নাপিতরা। তারপরেই স্কুল শিক্ষকরা।

৩৮. নামে কিছু আসে যায় না। আসে যায় কর্মে। যিশুখ্রিষ্টকে বিশুব্রিষ্ট ডাকলেও তাঁর যিশুত্ব কিছু মাত্র করবে না।

৩৯. বস জাতীয় মানুষদের কাছে থেকে ভালো ব্যবহার পাওয়া যায় না। যখন পাওয়া যায় তখন মনে হয় কোথাও বোধহয় সমস্যা আছে।

৪০. পুলিশের চাকরির আসল মজা ইউনিফর্মে। দেখা মাত্র সবাই সমীহ করে তাকাবে।