এক প্রভাবশালী ।সম্রাট এক অভিজ্ঞ শিক্ষাকের হাতে রাজকুমারের শিক্ষার ভার দিয়ে বললেনঃ শুনুন ওস্তাদজী! এ ছেলে আপনার নিজের সন্তান মনে করে শিক্ষা দেবেন।। কোন রকম ত্রুটি করবেন না। ওস্তাদজী সবিনয়ে বললেনঃ জো হুকুম জাঁহাপানা। বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি প্রাণপন প্রচেষ্টা চালালেন। কিন্তু যুবরাজকে তিনি বিদ্যাবুদ্ধি কিছু শিখাতে পারলেন। পক্ষান্তরে তার নিজের ছেলেরা জ্ঞানে গুণে শীর্ষস্থান অধিকার করল।। এই সংবাদ শুনে সম্রাট ভীষণ রেগে গেলেন এবং ওস্তাদকে গ্রেফতার করে এনে খুব রকম তিরষ্কার করে বললেনঃ আপনি আমার সা্থে কর্তব্য ও ওয়াদা খিলাফ করেছেন।। । সিংহাসন চুম্বন করে শিক্ষক সাহেব করজোর নিবেদন করলেনঃ হে রাজাধিরাজ! আপনার মত জ্ঞানী সম্রাটের এ কথা অজানা থাকার কথা নয় যে, শিক্ষকরা সকল শিক্ষার্থীকে সমান শিক্ষাই দিয়ে থাকেন, কিন্তু শিক্ষা গ্রহনের যোগ্যতা সকল ছাত্রের সমান থাকে না। শোনেন নি? “স্বর্ণ ও রৌপ্য পয়দা পাথরেই হয় তা বলে পাথর সব স্বর্ণ রোপ্য নয়… সূর্য। সর্বত্র দেয় কিরণ সমান; কোথা বা আগাছা জন্মে কোথা গুলিস্থান।।” শিক্ষাঃ গর্বি ছাত্রদের স্মরণ শক্তি কম, সে রাজার ছেলে হোক আর প্রজার ছলেই হোক, এলেম ধরে রাখতে পারে না। যিনি ওস্তাদ তিনি সকল ছাত্রকে সমান নজরেই দেখেন, যথাসাধ্য জ্ঞান বিতরণ করেন। কোন ছাত্র উক্ত জ্ঞান ধরে রাখতে পারে, আবার কেউ ধরে রাখতে পারে না। সকলের যোগ্যতা সমান নয়।

শেখ শাদী (র) সাধারনত খুবই সাদাসিদে জীবনযাপন করতেন। একবার এক দাওয়াতে তিনি ছেড়া ও নোংরা কাপড় চোপড় পড়ে চলে গেলেন। তাই মেজবান তাকে চিনতে না পেরে ফকির ভেবে অপেক্ষাকৃত কম ও অনুন্নত খাবার দিলেন। শেখ শাদী বিষয়টি বুঝতে পারলেন। তিনি ঐ কম ও অনুন্নত খাবার খেয়ে ফিরে এলেন এবং কিছুক্ষন পর আবার ভালো ও শাহেনশাহী কাপড় চোপড় পড়ে ঐ বাড়িতে গেলেন। এবার তার সামনে সকল উন্নত খাবার দাবার ও যথাযত সম্মান দেখানো হলো। তিনি খাবার খেতে বসে কিছু খেলেন এবং কিছু খাবার তার পরনে পরা জামার পকেটে ঢুকালেন ।

এই অবস্হা দেখে মেজবান প্রশ্ন করলেন, জনাব এটা কি করছেন ?

জবাবে শেখ শাদী (র) বললেন, একটু আগে আমি এসেছিলাম, আমার শরীরে ছিলো ছেড়া ও নোংরা কাপড়। তাই আপনি আমাকে যেভাবে সম্মান দেখালেন এখন আমার বেশভুসার কারনে আমাকে তার ছেয়ে অনেক বেশি সম্মান দেখিয়েছেন। তাই ভাবলাম এই সম্মান ও খাবার দাবার আমার প্রাপ্য নয়, ওগুলো সব ঐ বেশভুসার।

সেই মহান ব্যাক্তিকে একদিন একজন প্রশ্ন করলেন, জনাব আপনি এত আদব কিভাবে শিখলেন ?

তিনি জবাব দিলেন, দুনিয়ার সকল বেয়াদবদের দেখে দেখে আমি আদব শিখেছি।

কিভাবে ? আবার প্রশ্ন ।

তিনি জবাব দিলেন, যখন বেয়াদবরা তাদের বেয়াদবি আচরন করে আর দুনিয়ার মানুষ সেটাকে ঘৃনা করে তখন বুঝে নেই এই আচরনটা আমার করা উচিৎ নয়। এভাবেই আমি বেয়াদবদের কাছ থেকে আদব শিখি।