আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর উপায় পর্ব:-৩

আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর উপায় পর্ব:-৩

 

 

ইতিবাচক চিন্তা করা শুরু করুন

(২৩) জীবনে সব সময়ই যে সুখ থাকবে তা কিন্তু নয়। জীবন সুখ দুঃখ মিলিয়েই। আপনার কিছু অপূর্ণতার জন্য হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়লে আত্মবিশ্বাস কমে যাবে। দুঃখ যাবে না।‘আমাকে দিয়ে কিছু হবে না, কিছুই করতে পারলাম না’ তাহলে শুধু নিজেকে কষ্টই দেয়া হবে। আজকে থেকে ইতিবাচক চিন্তা শুরু করুন। ‘কিছুই হবে না আমাকে দিয়ে’ এই ধরনের চিন্তার বদলে ‘আমাকে দিয়ে অনেক কিছুই হওয়া সম্ভব’ এই ধরনের চিন্তা করুন। নেতিবাচক ঘটনাকেও ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখার চেষ্টা করুন। আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

জ্ঞান বাড়ান

(২৪) কুয়োর ব্যাঙের মত জীবন যাপন করলে আত্মবিশ্বাসহীনতায় ভুগতে পারেন অনেকেই। নিজের গণ্ডির বাইরে চিন্তা করুন। নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর সব চাইতে ভালো উপায় হচ্ছে নিজের জ্ঞান বাড়ানো। গবেষণা করে নতুন নতুন জিনিষ জানার চেষ্টা করুন। নিজেকে যত বেশি জ্ঞানী করে তুলতে পারবেন ততই আত্মবিশ্বাস বাড়বে। নিজেকে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর করে পৃথিবীর মুখোমুখি হতে পারবেন।

মানুষের জন্য কিছু করুন

(২৫) সুবিধাবঞ্চিত কিংবা বিপদে পড়া মানুষকে সাহায্য করার মনোভাব তৈরি করুন। আত্মবিশ্বাস পুনরায় ফিরে পেতে অথবা আত্মবিশ্বাস বাড়াতে এটি অনেক কার্যকরী একটি উপায়। সুবিধাবঞ্চিত কিংবা দুর্যোগ/ দুর্ঘটনার শিকার বিপদে পড়া মানুষকে সাহায্য করলে মন থেকে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হওয়া যায়। মনের ভেতরে নিজেকে নিয়ে গর্ব সৃষ্টি হয়। এইরকম স্বেচ্ছাসেবা মূলক কাজে নিয়োজিত করেই দেখুন না নিজেকে কতটা আত্মবিশ্বাসী লাগে।

বদলে ফেলুন নিজের দৈনন্দিন কিছু কাজ

(২৬) নিজের দৈনন্দিন কিছু কাজে পরিবর্তন এনেও আপনি নিজেকে আরও আত্মবিশ্বাসী করতে পারেন। প্রতিদিনের রুটিন বদলে ফেলুন। গৎবাঁধা কাজ গুলোতে পরিবর্তন আনুন। প্রতিজ্ঞা করুন দিনে অন্তত একটি ভালো কাজ করবেন, অথবা অন্তত একজনকে সাহায্য করবেন নিজের সাধ্য অনুযায়ী। এমনকি কারো সাথে কিছুক্ষণ হাসিমুখে কথা বললেও নিজেকে অন্যরকম মনে হবে।

ব্যায়াম করুন

(২৭) সকাল শুরু করুন স্নিগ্ধ আলোয় শারীরিক কিংবা যোগ ব্যায়ামের মাধ্যমে। সারাদিনের কাজের জন্য নিজেকে কর্মক্ষম করে নিলে পুরো দিনেই নিজেকে আত্মবিশ্বাসী পাবেন। ডাক্তারদেরও একই অভিমত। সকালে মাত্র ১০/১৫ মিনিটের যোগ ব্যায়াম মানুষের মনকে প্রফুল্ল রাখে ও আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে সাহায্য করে। সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্যায়ামের অভ্যাস করুন। মনের গ্লানি অনেকাংশেই দূর হবে।

পারকিনসন্স ল

(২৮) সিরিল নর্থকোট পারকিনসন বলেছিলেন, শেষ মিনিট পর্যন্ত আপনার অপেক্ষার অর্থ হলো আরো এক মিনিট বেশি সময় নেওয়া। আমাদের সবার জীবনে প্রতিনিয়ত এই নিয়মের প্রয়োগ ঘটে। খেয়াল করে দেখুন, এক মাস আগে যে প্রজেক্টটি শুরু করেছিলেন, হয়তো তার আসল কাজটুকু হয়েছে শেষতম সপ্তাহে। অর্থাৎ, বাকি সময়টুকু পুরোই জলে গেছে। পারকিনসনের এই বিখ্যাত ল-এর মাধ্যমে কাজের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ নৈপুণ্য আনা হয়েছে।

সক্ষমতার সর্বোচ্চ বিন্দুতে পৌঁছানো

(২৯) অ্যাথলেটরা সক্ষমতার এই অংশকে বলেন 'ইন দ্য জোন'। এই পর্যায়ে আপনি এতটাই মনোযোগী থাকেন যে বিপুল ধ্বংসযজ্ঞ আপনাকে একচুলও টলাতে পারে না।

একটিমাত্র কাজ

(৩০) একযোগে বহু কাজের বিষয়ে অনেক নেতিবাচক দিক রয়েছে। অর্থাৎ একসঙ্গে বহু কাজ নয়, বরং এক কাজ থেকে অন্য কাজে চলে যাওয়া। আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল বলেছিলেন, সূর্যরশ্মি কখনো পোড়ায় না, যদি না তা একটি বিন্দুতে কেন্দ্রীভূত করা হয়।

দুই মিনিটের নিয়ম

(৩১) ই-মেইলে ইনবক্স পরিষ্কার করা, ভয়েস মেইল চেক করে নেওয়া বা কোনো অনুরোধের অনুমোদন দেওয়ার মাধ্যমে আগামীর বড় বড় কাজের অনেকাংশ শেষ করে ফেলা যায়।

জৈবিক চক্রের তালে তাল মেলানো

(৩২) আমাদের মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষগুলো সার্কাডিয়ান রিদম নিয়ন্ত্রণ করে। এটি এমন এক জৈবিক প্রক্রিয়া যা নির্দিষ্ট সময় পর পর চক্রাকারে ঘুরে আসে। কাজের সময় মানসিকতার সবচেয়ে ইতিবাচক অধ্যায় নির্ভর করে এই জৈবিক চক্রের বিভিন্ন সময়ের ওপর।

পাল্টা প্রকৌশল

(৩৩) নির্দিষ্ট কাজের পেছনে যে প্রকৌশল ব্যবহার করা হয়, এর বিপরীত কৌশলগুলোকেও ভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। কর্মদক্ষতা শুধু কাজের প্রক্রিয়া জানার মাধ্যমেই আসে না, যন্ত্র বিগড়ে গেলে তাকে বাগে আনার মাধ্যমেও এর প্রমাণ মেলে।