আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর উপায় পর্ব:-4

আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর উপায় পর্ব:-4

 

 

অপরিসীম ইচ্ছাশক্তি

(৩৪) স্ট্যানফোর্ডের প্রফেসর কেলি ম্যাকগোনিগাল বলেন, ইচ্ছাশক্তির তিনটি ভিন্ন প্রায়োগিক দিক থেকে সফলতা বাগিয়ে আনা যায়। এগুলো হলো- আমি শক্তির প্রয়োগ ঘটাব না- এর মাধ্যমে লোভ সংবরণ করা হয়। আমি শক্তির প্রয়োগ ঘটাব- এর মাধ্যমে মূল কাজের সঙ্গে বিকল্প উপায় অবলম্বন করা হয়। আমি শক্তির প্রয়োগ ঘটাতে চাই- এর মাধ্যমে আপনার লক্ষ্য, গন্তব্য, ক্যারিয়ারকে এগিয়ে নেওয়া ইত্যাদি বিষয় বারবার মনে আসে। ইচ্ছাশক্তি অনেকটা পেশিশক্তির মতো। সফল না হলে এটি নিজেই 'আমি শক্তির প্রয়োগ ঘটাব না' উপায় গ্রহণ করে। কিন্তু ইচ্ছাশক্তিকে জাগিয়ে তুলে আবার পেশিকে বলশালী করে তোলা যায়।

৫৭ মিনিট চালু, ১৭ মিনিট বিশ্রাম

(৩৫) বিশ্রামে উদ্যম ফিরে আসে। বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন, মানুষের মনোযোগী থাকার সহজাত প্রবণতার চক্রটি মস্তিষ্কে টানা ৯০ মিনিট স্থায়ী হয়। এরপর ২০ মিনিটের বিশ্রামের দরকার হয় মস্তিষ্কের।

অঙ্গভঙ্গি শক্তির আধার

(৩৬) মানুষের অঙ্গভঙ্গির সামান্য পরিবর্তনে ব্যাপক কিছু ঘটে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞ অ্যামি কাডি বলেন, মানসিক দ্বন্দ্ব এবং স্নায়বিক চাপের উদ্ভব হতে পারে অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে। উদ্দীপনার সঙ্গে কোনো দৈহিক বিন্যাসের কারণে দেহ-মনের শক্তি বহুগুণ বেড়ে যেতে পারে। এর ফলে টেস্টোসটেরনের মাত্রা বাড়ে, যা আত্মবিশ্বাসের জন্ম দেয়।

স্থায়ী অর্জন

(৩৭) বিশেষজ্ঞ এরিক রিয়েস জানান, ভুল কোনো পণ্য দক্ষতা ঢেলে তৈরির চেষ্টার অর্থ হলো, আঁকাবাঁকা পথে গাড়ি চালিয়ে গ্যাস পুড়িয়ে আস্ফালন করার মতো। বিশেষ করে প্রযুক্তি পণ্য তৈরিতে আমাদের শ্রমের দিকে দৃষ্টি দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট কোনো পদ্ধতি এবং লক্ষ্য বেঁধে দেওয়া হয় না। এটাই এই দুনিয়ার কৌশল। এর মাধ্যমে পুরোদমে সামনে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য না নিয়ে উৎপাদনশীলতার চূড়ায় পৌঁছানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়। আসলে অর্জনকে স্থায়িত্ব দিতে হলে সেখানে সফলতা আসবেই।
--বিজনেস ইনসাইডার অবলম্বনে সাকিব সিকান্দার

তাদের স্থানে আপনার চিন্তাটা নিয়ে নিন

(৩৮) গড়ে প্রত্যেক মানুষ প্রতিদিন ৬৫ হাজার চিন্তা করে থাকে। ব্ল্যালক বলেন, এসব চিন্তার ৮৫ থেকে ৯০ ভাগই নেতিবাচক। এগুলো হতে পারে কোনো ভয়ের বিষয়বস্তু বা সম্ভাবনার কথা কল্পনা। কোনো আগুন ধরলে আপনার হাত যদি পুড়ে যায়, তাহলে মস্তিষ্ক পরবর্তীতে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়িয়ে চলার জন্য খুবই সতর্ক হয়ে যায়। এ সতর্ক হওয়ার ফলে তৈরি হয় ভয়ের। যা পরবর্তীতে নিজের বিপক্ষে কাজ করা শুরু করে।
কিন্তু আপনি যদি বুঝতে পারেন, মস্তিষ্ক এভাবে কাজ করে এবং সেই নেতিবাচক ভাবনাকে সরিয়ে রাখেন তাহলে তা সত্যিই কাজের হয়। এজন্য আপনাকে বুঝতে হবে যে, এগুলো শুধুই চিন্তা। এগুলো সবসময় সত্যিকার অবস্থা তুলে ধরে না।

শেষের মাঝে শুরু

(৩৯) ‘আপনি কি করতে চান?’ বা ‘আপনি কি হতে চান?’ বহু মানুষকে এমন জিজ্ঞাসা করলে তারা পরিষ্কার করে কোনো উত্তর দিতে পারে না। কিন্তু এটা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, যার উত্তর জানা উচিত। আপনি যেখানে যেতে চান, তার একটি পথনির্দেশ থাকা উচিত আপনার।

থামানো গাড়িকে কেউ তাড়া করে না

(৪০) আপনি যদি এগিয়ে যেতে থাকেন তাহলে বিরোধী পক্ষ আপনাকে প্রশ্ন, সমালোচনা, সন্দেহ এবং নানাভাবে তাড়া করবে। এটা হতে পারে একটা ভালো বিষয় যে, আপনি এগিয়ে যাচ্ছেন। তবে পাশাপাশি আপনার সমালোচনাকে গ্রহণ করতে হবে এবং সে অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে হবে।

কারো সাহায্য চাইতে ভুলবেন না

(৪১) আপনি যা চাইছেন, তা মানুষকে অনুমান করতে দেবেন না। এ বিষয়ে আপনার অনুমান করতে হবে বিষয়টি কী। কোনো বিষয়ে মানুষের সাহায্য চাইলে তাদের আগ্রহ দেখে আপনি অবাক হবেন। বেশিরভাগ মানুষই সাহায্য করার জন্য আগ্রহী থাকেন এবং খুব কম মানুষই ‘না’ বলেন।

অন্য কারো জন্য অর্থ ব্যয় করুন

(৪২) সাইকোলজিক্যাল বুলেটিনে প্রকাশিত একটি গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, ‘নিজের জন্য টাকা খরচ করার এক ধরণের আনন্দ রয়েছে তা কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না। কিন্তু অন্য কারো জন্য অর্থ খরচ করার আনন্দ তার চাইতেও বেশি’। গবেষণায় দেখা যায় তারাই অনেক বেশি সুখী যারা অন্য মানুষকে দিতে পছন্দ করেন।

ভালো ঘটনা এবং ভালোবাসা পাওয়ার ঘটনার হিসাব রাখুন

(৪৩) সত্যি সত্যি এই কাজটিই করুন। ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভানিয়ার প্রোফেসর মার্টিন সেলিগম্যান প্রমাণ করেন, যিনি দিনে অন্তত নিজের সাথে ঘটা ৩ টি ঘটনা রাতে লিখে রাখেন তিনি বৈজ্ঞানিকভাবেই অনেক বেশি সুখী

নতুন কিছু করুন

(৪৪) মানুষ একঘেমে জীবন যাপন করলে সুখ খুঁজে পান না। একঘেয়েমি কাটানোর সব চাইতে ভালো উপায় হচ্ছে নতুন কিছু করা। এটি বৈজ্ঞানিকভাবেই প্রমাণিত।

নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলুন