আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর উপায় পর্ব:- ১৫

আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর উপায় পর্ব:- ১৫

 

 

অফিশিয়াল পোশাক পরিধান করা

(১৫৫) মানতে কষ্টকর হলেও এটা সত্যি যে, সাধারণ পোশাকের চাইতে অফিশিয়াল বা ফরমাল পোশাক, যেমন- কোট, টাই আর শু-তে মানুষ অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসীভাবে ব্যবহার করে। কারণ, এক্ষেত্রে পোশাক মানুষের চিন্তাকে প্রভাবিত করে। অন্যদের সামনে নিজেকে সপ্রতিভ করে তুলতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা যায় যে, অন্যদের চাইতে ফরমাল পোশাকে ইন্টারভিউ দিতে আসা প্রার্থীরা বেশি বিস্তৃতভাবে ভাবতে ও পরিপক্কভাবে উত্তর দিতে সক্ষম হয়।

সুগন্ধী ব্যবহার করা

(১৫৬) অনেকটা পোশাকের মতোই সুগন্ধীও মানুষকে অনেক বেশি নিজের সম্পর্কে ভালো ধারণা দিতে সাহায্য করে। ফলে সুগন্ধীযুক্ত স্প্রে ব্যবহার করুন। এতে করে নিজেকে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী লাগবে আপনার। সেই সঙ্গে অন্যদের সামনেও আরো বেশি শক্তিশালী হিসেবে উপস্থাপন করতে পারবেন আপনি নিজেকে।

নিজস্ব বিশ্বাসকে আঁকড়ে ধরা

(১৫৭) ব অস্বস্তি লাগছে? হাত-পা ঘেমে যাচ্ছে? মাথা কাজ করছে না? বৈজ্ঞানিক বিভিন্ন পন্থা সম্পর্কে কথা বলা হলেও খুব অদ্ভূতভাবে আপনি এর একেবারে উল্টো ব্যাপারটিকে দিয়েও ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনার ভেতরের হারিয়ে যাওয়া শক্তিকে। নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে নিজস্ব ধারণা শক্তিশালী করে তুলতে নিজস্ব বিশ্বাসের ওপর নির্ভর করুন। হতে পারে সেটা একটা লাকি চার্ম কিংবা সামান্য কোনো শারীরিক কসরত। গবেষণায় দেখা যায় যে, লাকি চার্ম নিয়ে ইন্টারভিউ কক্ষে প্রবেশ করা প্রার্থীরা অন্যদের চাইতে বেশি স্মৃতিশক্তির অধিকারী ছিলেন।
নিজেকে অন্যদের সামনে ভালোভাবে, সঠিকভাবে এবং আরো একটু শক্তিশালীভাবে তুলে ধরতে কে না চায়? কিন্তু তবুও সামান্য একটু অস্বস্তি শেষ সময়ে এসে গোলমাল করে দিয়ে যায় আমাদের সব সাজিয়ে রাখা ভাবনাগুলোকে। তাই এই উপায়গুলোকে দেখে নিন আর নিজেকে গড়ে তুলুন আত্মবিশ্বাসী।

সামাজিকতা বাড়িয়ে ফেলুন

(১৫৮) আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলার জন্য সামাজিকতা বাড়িয়ে তোলা প্রয়োজন। সামাজিক অনুষ্ঠান গুলোতে নিয়মিত যাওয়ার চেষ্টা করুন। নতুন নতুন মানুষজনের সাথে নিজেই পরিচিত হয়ে নিন। নিজেকে প্রকাশ করুন সমাজের সব ধরণের মানুষের সামনে। তাহলে নিজের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে অনেক খানি।

নিজেকে গুছিয়ে রাখুন

(১৫৯) আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হলে নিজেকে গুছিয়ে রাখা জরুরি। নিজের পরিচ্ছন্নতার দিকে খেয়াল রাখুন সব সময়। ভালো সুগন্ধি ব্যবহার করুন। যেখানেই যাবেন খেয়াল রাখুন যেন আপনার মুখ থেকে দুর্গন্ধ না আসে। এছাড়াও পরিষ্কার ও রুচিশীল পোশাক পরুন সবসময়।

সাধ্যমত সমাজ সেবা করুন

(১৬০) আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলার আরেকটি হাতিয়ার হলো সমাজ সেবা করা। নিজের সাধ্যমত সমাজের অবহেলিত মানুষদেরকে সাহায্য সহযোগীতা করলে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে বহুগুণে। সেই সাথে আত্মতৃপ্তিও পাবেন।

নেতিবাচক মানুষ থেকে দূরে থাকুন

(১৬১) আত্মবিশ্বাস বাড়িতে তুলতে হলে নেতিবাচক মানুষদের সঙ্গ ত্যাগ করুন। যেসব মানুষ পদে পদে আপনার ভুল ধরে, আপনাকে নিরুৎসাহিত করে তাদের থেকে যত দূরে থাকা যায় ততই আপনার জন্য ভালো। কারণ এধরনের মানুষজন আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়।

নিজেকে খুশি রাখার চেষ্টা করুন

(১৬২) নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হলে নিজেকে খুশি রাখার চেষ্টা করুন। আমরা অনেকেই অন্যকে খুশি রাখার ব্যস্ততায় নিজের খুশির বিষয়গুলোকে ভুলে যাই। অন্যকে খুশি রাখার চেষ্টা না করে বরং নিজের জন্য যেটা ভালো সেটাই করুন। নিজের মনের ইচ্ছার গুরুত্ব দিন সবসময়। তাহলে আপনার আত্মবিশ্বাস অনায়েসেই বেড়ে যাবে অনেকখানি।

উদ্দীপনামূলক গান শোনা

(১৬৩) উদ্দীপনামূলক গান বলতে বোঝানো হচ্ছে, প্রচণ্ড ঝাঁঝালো আর উত্তেজনাকর সুর এবং শক্তি ও প্রেরণাদায়ক কথার গান। সামনে কোনো ইন্টারভিউ বা কাজ থাকলে মনে মনে দূর্বল হয়ে পড়াটাই স্বাভাবিক। তাই নিজের ভেতরে জোর ফিরিয়ে আনতে শুনুন এমনই কিছু গান। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, যেসব শিক্ষার্থী এমন উদ্দীপনামূলক গান শুনে থাকেন, অন্যদের চাইতে অনেক বেশি সপ্রতিভ আচরণ করে থাকেন তারা।

সৃজনশীল কাজে মনোনিবেশ করুন

(১৬৪) গঠনমূলক কাজে যোগ দিন। যেসব কাজে আপনার দক্ষতা আছে সেসব কাজ করুন। গান, নাচ, ছবি আঁকা, বই লেখা ইত্যাদি কাজে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারেন। নিজের পরিচয় গঠন করুন। মনে রাখবেন, মানুষ চেহারা দিয়ে মানুষকে মনে রাখে না। বরং তার কাজে মনে রাখে। সুন্দরের পিছনে লুকিয়ে থাকা ধ্বংসাত্মক কাজের চেয়ে, অসুন্দরের ভেতরে থাকা গঠনমূলক কাজের মূল্য বেশি। আপনি আপনার চেহারা নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগে আপনার ভেতরকার সৃজনশীল ও উন্নত মনকে সব কিছু থেকে গুতিয়ে রাখবেন না। নিজেকে সফল মানুষ হিসেবে পরিচিতি পেতে দেখলে আপনা আপনিই আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

নিজেকে সময় দিন

(১৬৫) নিজেকে বোঝার সময় দিন। নিজেকে কিভাবে সফলতা উপহার দিতে পারবেন সে কথা ভাবুন। সব সময় নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করে হীনমন্যতায় পরে থাকবেন না। আপনি নিজে যেমন সমাজে ঠিক তেমন ভাবে নিজেকে উপস্থাপন করুন। প্রথমে নিজেকে সম্মান করতে শিখুন। নিজের ব্যক্তিত্বকে ভালবাসতে শিখুন। কারো প্রশংসা কুড়ানোর জন্য তার কথা মত নিজেকে তৈরি করবেন না। আপনার ভেতরের আলোকিত সৌন্দর্য কাউকে বোঝাতে যাবার কোন প্রয়োজন নেই। মনে রাখবেন, যে আপনাকে বোঝে তাকে আপনি কী তা নতুন করে বোঝানোর প্রয়োজন নেই, আর যে আপনাকে বোঝে না তাকে বোঝাতে যাওয়ারও কোন প্রয়োজনীয়তা নেই। তাই এইসবে সময় নষ্ট না করে নিজেকে সময় দিন।